নতুন জন্ম সনদ করতে কি কি লাগে?

আসসালামু আলাইকুম।এই আর্টিকেলে আপনারা জানতে পারবেন নতুন জন্ম সনদ করতে কি কি লাগে? জন্ম নিবন্ধন করতে কত টাকা লাগে? (৫০ টাকা) এবং এ সংক্রান্ত সকল প্রশ্নের উত্তর।

জন্ম নিবন্ধন কার্ড তৈরি করার জন্যে সকলেই আমরা বিভিন্ন সমস্যায় পরি। এসব সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্যে আমি নিয়ে আসেছি এই ওয়েবসাইটটি। আমার এ ওয়েবসাইটে আপনি জন্ম নিবন্ধন সংক্রান্ত সকল প্রশ্নের উত্তর পাবেন।

বিশেষ করে জন্ম নিবন্ধন যাচাই, সহ আপনি যদি জন্ম নিবন্ধন সংশোধন আবেদন করতে চান কিংবা এসব করতে সমস্যায় পরেন তাহলে আমাদের এই ওয়েবসাইট ই হবে আপনার সল্যুশন।

জন্ম নিবন্ধন কার্ড আসলেই কি?

বাংলাদেশে জন্ম নিবন্ধন কার্ড হচ্ছে এক ধরণের নাগরিক স্বীকৃতি যা অত্যন্তই প্রাথমিক পর্যায়ভুক্ত । তবে একে প্রাথমিক পর্যায়ের সনদ বলে অবহেলা করলে জীবনে পদে পদে সমস্যায় পরবেন।

এটি যেমনি সামান্য কার্ড তেমনি এর অসামান্য ব্যবহার আছে। শিশু জন্মের ৪৫ দিনের মধ্যে এখন জন্ম নিবন্ধন করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

বি:দ্র: আমাদের দেশের প্রায় এক কোটি মানুষ এখনও অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ সম্পর্কে অবগত নয়।

আমাদের দেশের আইন সম্পর্কে অবগত আছেন যে আইনের প্রয়োগ কতটুকু হয়। তবে আপনি যদি শিশু জন্মের ৪৫ দিনের মধ্যে জন্ম নিবন্ধন আবেদন করেন তাহলে খুব একটা সমস্যায় পড়তে হয় না এবং কাগজপত্র নামেমাত্র কয়েকটা লাগে।

আসুন এখন জানি,

জন্ম নিবন্ধন সনদ না বানালে কি কি সমস্যা পরতে হতে পারে।

ক্ষেত্রযেসব সমস্যায় পড়তে পারেন
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রেস্কুল কলেজে সকলকেই পড়তে হয়,হোক সে নিজে কিংবা তার সন্তানসন্ততি।। জন্ম সনদ ছাড়া ভর্তি এক প্রকার ইম্পোসিবল
জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরিজাতীয় পরিচয়পত্র তৈরিতে আগে জন্ম সনদ তেমন একটা লাগতো না। কিন্তু ইদানিং অনেক কড়াকড়ি নিয়ম বানানো হইছে। যেখানে জন্ম সনদ লাগবেই।এটি ছাড়া আপনি অচল।
লাইসেন্স তৈরিতেপ্রাপ্তবয়স্ক লোকেরা বিভিন্ন লাইসেন্স তৈরি করেন যেমন ড্রাইভিং লাইসেন্স, ট্রেডিং লাইসেন্স ইত্যাদি। আপনাকে এসব ক্ষেত্রে জন্ম সনদ লাগবেই।
পাসপোর্ট তৈরিতেপাসপোর্ট তোইরি করার জন্যে আপনাকে জন্ম সনদ প্রদান করতে হবে। পাসপোর্ট তৈরিতে জন্ম সনদ একেবারে মৌলক কাগজ।
সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত চাকরিযেকোনোধরনের চাকরির ক্ষেত্রে জন্ম সনদ লাগবেই।আপনার নাগরিকত্ব প্রমাণ স্বরুপ এগুলো দিতে হয়।
বিয়ের নিবন্ধন করার ক্ষেত্রেবিয়ে করার জন্যে জন্ম সনদ লাগে। নয়তো বিয়েই করতে পারবেন না।হাহা।সত্যই তাই।
সম্পত্তি ক্রয়-বিক্র‍য়ের ক্ষেত্রেসম্পত্তি তো অনেকেই কিনেন কিংবা বেঁচেন। অবশ্যই জানার কথা, জমির ক্ষেত্রে যেকোনো কাগজের ঘাটতি কি পরিমাণ পেরা দেয়।
বয়স প্রমাণের ক্ষেত্রেআমরা অনেকেই অনেক বড় ধরনের দূর্ঘটনায় পতিত হই। তখন জন্ম নিবন্ধনের বয়স প্রমাণের প্রয়োজন পরে। যেমন কেউ কোনো ক্রাইম করলে তার বিচার কোন বয়সের ভিত্তিতে হবে সেটা জন্ম নিবন্ধন সনদ নির্দেশ করে দেয়।
কি কি সমস্যায় পড়বেন?

এখন আসি আসল পয়েন্টে। যেখানে আজকের আর্টিকেলের মূল আলোচনা।

নতুন জন্ম সনদ করতে কি কি লাগে?

জন্ম সনদ করতে কি কি লাগে

শিশুর বয়স ০ থেকে ৪৫ দিন হলে যা যা লাগবে:

  • পিতা মাতার জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি। অথবা পিতা মাতার আনলাইন জন্ম সনদের ফটোকপি। (বাংলা ও ইংরেজি উভয়ই)
  • সন্তানের জন্ম কোনো মেডিকেলে হলে সেখানকার ডাক্তার দ্বারা গৃহীত সনদপত্র অর্থাৎ রিলিজ পেপারের ফটোকপি। যদি সন্তানের জন্ম বাড়িতে হয় তাহলে লাগবে না।
  • বাসার হোল্ডিং ট্যাক্স পেপারের ফটোকপি কিংবা ইউনিয়ন পরিষদের ট্যাক্স পরিশোধের কাগজের ফটোকপি।
  • শিশুর এক কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি।

শিশুর বয়স ৪৫ দিন থেকে ৫ বছর হলে যেসব কাগজপত্র লাগবে:

  • ইপিআই কার্ড অর্থাৎ টিকা কার্ড। টিকা কার্ড করার সময় একটু খেয়াল রাখবেন যাতে টিকা কার্ডে ভালোভাবে নির্ভূল নাম লেখে। তা না হলে পরে জন্ম নিবন্ধন সনদে নাম ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যদি নাম ভুল করে লিখেই ফেলে তখন আপনি নতুন জন্ম সনদ করার সময়ে ইউপি সচিব বা সংশ্লিষ্ট কাউকে জানাবেন।
  • বাসার হোল্ডিং ট্যাক্স কিংবা ইউনিয়ন পরিষদ কতৃক পরিশোধিত ট্যাক্সের পেপার।
  • পিতা মাতার জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি কিংবা তাদের উভয়েরই অনলাইন জন্ম সনদের ফটোকপি।
  • আবেদনকারীর এক কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।

শিশুর বয়স ৫ বছর থেকে এর বেশি হলে

  • শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্ফটিফিকেট যেমন PEC, JSC, SSC, HSC কিংবা তদূর্ধ্ব শ্রেণির। যদি না থাকে তাহলে বয়স প্রমাণের জন্যে সরকারি ডাক্তার দ্বারা সাইনকৃত সার্টিফিকেট।
  • বাসার হোল্ডিং ট্যাক্সের কাগজ কিংবা ইউপি ট্যাক্সের কাগজের ফটোকপি
  • পিতা মাতার জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি কিংবা তাদের অনলাইন জন্ম সনদের ফটোকপি(বাংলা ও ইংরেজি)

এ বিষয়ে আরও জানতে ভিজিট করতে পারেন: https://bdris.gov.bd/dr/application

জন্ম নিবন্ধন সনদ কোথায় তৈরি করবেন?

জন্ম নিবন্ধন তৈরি করতে আপনাকে নিবন্ধকের কার্যালয় যেতে হবে। এজন্য আপনাকে নিবন্ধকের কার্যালয় খুজে বের করতে হবে। আপনার বর্তমান ঠিকানা অনুযায়ী নিবন্ধকের কার্যালয়ের ঠিকানা ভিন্ন ভিন্ন হবে। নিচের নির্দেশনাগুলো লক্ষ্য করুন।

আবেদনকারীর বর্তমান ঠিকানা ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় হলে:

ইউনিয়ন পরিষদে যেতে হবে। ইউপি চেয়ারম্যান অথবা সচিব কিংবা তৎকৃত ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি জন্ম নিবন্ধন সনদের আবেদন গ্রহণ করবেন।

আবেদনকারীর ঠিকানা পৌরসভা এলাকায় হলে:

পৌরসভার মেয়র কিংবা তার দ্বারা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা কিংবা পৌরসভার কোনো কাউন্সির জন্ম সনদের কাজ করে থাকে।

আবেদনকারীর বর্তমান ঠিকানা সিটি-কর্পোরেশন এলাকায় হলে:

সিটি-কর্পোরেশন এর মেয়র কিংবা তার দ্বারা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা কিংবা সিটি কর্পোরেশন এর কোনো কাউন্সিলর

আবেদনকারীর বর্তমান ঠিকানা ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় হলে:

ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের প্রেসিডেন্ট কিংবা তার দ্বারা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা নির্দিষ্ট কার্যালয়ে জন্ম সনদের আবেদন গ্রহণ করেন।

আবেদনকারীর বর্তমান ঠিকানা বিদেশ হলে:

বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশি দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত কিংবা তার দ্বারা ক্ষকতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা জন্ম সনদের আবেদন গ্রহণ করেন।

জন্ম সনদের আবেদন মূলত অনলাইন থেকে করা যায়।আপনি যেখানেই থাকেন না কেনো।**

নতুন জন্ম সনদ করতে কি কি লাগে?

সহজ কথায় জন্ম সনদ বানাতে পিতা মাতার আইডি কার্ডের ফটোকপি, শিশুর বয়স প্রমাণের জন্যে ডাক্তার কতৃক সাইনকৃত পেপার/টিকা কার্ড/একাডেমিক সার্টিফিকেট, হোল্ডিং ট্যাক্সের কাগজ এবং শিশুর পাসপোর্ট সাইজের ছবি

জন্ম নিবন্ধন করতে কত টাকা লাগে ?

নতুন জন্ম সনদ আবেদন করতে মোট ৫০ টাকা লাগে।যদিও দূর্নীতি বিদ্যমান।

আজকের মতো এ পর্যন্তই। ভালো থাকবেন।

Notes: এই আর্টিকেলেটির কিছু অংশ টেন মিনিটস স্কুলের আর্টিকেল থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে লেখা হয়েছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top